ময়মনসিংহ ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিরিয়ায় আসাদকে উৎখাত করা বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র

সিরিয়ায় বাশার আল আসাদকে উৎখাত করা বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত আসাদ সরকারের পতনের পর এইচটিএস বিদ্রোহীরা সিরিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তাদের সঙ্গেই যোগাযোগ করেছে দেশটি।শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) এমনটাই দাবি করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ব্লিঙ্কেন জানান, এইচটিএস ও অন্যান্য পক্ষের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ হয়েছে, বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ মার্কিন সাংবাদিক অস্টিন টাইসের বিষয়ে।

এইচটিএসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের কথা প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করলো যুক্তরাষ্ট্র। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এই গোষ্ঠীকে এখনও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।

জর্ডানে আয়োজিত এক বৈঠকে কয়েকটি আরব দেশ, তুরস্ক ও ইউরোপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনায় এইচটিএসের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের কথা উল্লেখ করেন ব্লিঙ্কেন। বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। বৈঠকের যৌথ বিবৃতিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়, যারা সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করবে ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেবে না।

জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সিরিয়া নৈরাজ্যের মধ্যে পড়ুক, আঞ্চলিক শক্তিগুলো সেটা চায় না।

সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হুসেইন। গাদ্দাফির পতনের পর লিবিয়ার অরাজক পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, আঞ্চলিক শক্তিগুলো ওই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বিদ্যমান সিরিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলোর সংরক্ষণ ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি বলেছেন, পরিবর্তনশীল অবস্থার সুযোগে সন্ত্রাসবাদকে মাথাচাড়া দিতে দেবেন না। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এইচটিএস একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে তাদের অতীতের সহিংসতা অনেককে সন্দিহান করে তুলেছে যে তারা এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে কি না।

৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহীগোষ্ঠী দামেস্ক দখল করলে দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট আসাদ। এর মধ্য দিয়ে তার ২৪ বছরের শাসনের সমাপ্তি ঘটে।

১৩ বছরের বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। কয়েক মিলিয়ন মানুষ হয়েছেন বাস্তুচ্যুত। আসাদ পরবর্তী সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শক্তিগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে পরিচিত এইচটিএস নেতা আহমেদ আল-শারা দেশটির অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ আল-বশিরকে নিয়োগ দিয়েছেন। সিরিয়ার নতুন রাজনৈতিক কাঠামো কেমন হয় তা দেখার জন্য পুরো বিশ্বের নজর এখন সিরিয়ার দিকে নিবদ্ধ রয়েছে।

ট্যাগ :

সিরিয়ায় আসাদকে উৎখাত করা বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র

পোষ্টের সময় : ০৩:৪৬:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

সিরিয়ায় বাশার আল আসাদকে উৎখাত করা বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত আসাদ সরকারের পতনের পর এইচটিএস বিদ্রোহীরা সিরিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তাদের সঙ্গেই যোগাযোগ করেছে দেশটি।শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) এমনটাই দাবি করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ব্লিঙ্কেন জানান, এইচটিএস ও অন্যান্য পক্ষের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ হয়েছে, বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ মার্কিন সাংবাদিক অস্টিন টাইসের বিষয়ে।

এইচটিএসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের কথা প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করলো যুক্তরাষ্ট্র। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এই গোষ্ঠীকে এখনও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।

জর্ডানে আয়োজিত এক বৈঠকে কয়েকটি আরব দেশ, তুরস্ক ও ইউরোপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনায় এইচটিএসের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের কথা উল্লেখ করেন ব্লিঙ্কেন। বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। বৈঠকের যৌথ বিবৃতিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়, যারা সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করবে ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেবে না।

জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সিরিয়া নৈরাজ্যের মধ্যে পড়ুক, আঞ্চলিক শক্তিগুলো সেটা চায় না।

সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হুসেইন। গাদ্দাফির পতনের পর লিবিয়ার অরাজক পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, আঞ্চলিক শক্তিগুলো ওই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বিদ্যমান সিরিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলোর সংরক্ষণ ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি বলেছেন, পরিবর্তনশীল অবস্থার সুযোগে সন্ত্রাসবাদকে মাথাচাড়া দিতে দেবেন না। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এইচটিএস একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে তাদের অতীতের সহিংসতা অনেককে সন্দিহান করে তুলেছে যে তারা এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে কি না।

৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহীগোষ্ঠী দামেস্ক দখল করলে দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট আসাদ। এর মধ্য দিয়ে তার ২৪ বছরের শাসনের সমাপ্তি ঘটে।

১৩ বছরের বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। কয়েক মিলিয়ন মানুষ হয়েছেন বাস্তুচ্যুত। আসাদ পরবর্তী সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শক্তিগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে পরিচিত এইচটিএস নেতা আহমেদ আল-শারা দেশটির অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ আল-বশিরকে নিয়োগ দিয়েছেন। সিরিয়ার নতুন রাজনৈতিক কাঠামো কেমন হয় তা দেখার জন্য পুরো বিশ্বের নজর এখন সিরিয়ার দিকে নিবদ্ধ রয়েছে।