বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, যারা নিঃস্ব হয়েছে, যারা বাড়িতে থাকতে পারে নাই। যারা চাকরী হারিয়েছে, যারা ব্যবসা বাণিজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের প্রতি অবশ্যই দায়িত্ব আছে আমাদের। এটার পাশাপাশি যে কারনে কষ্ট করেছে সেটাও দূর করতে হবে। আমরা একদফা আন্দোলন করছিলাম। স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক। জুলাই-আগস্টে ফ্যাসিবাদ-স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্র এখনো পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমাদের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। গণতন্ত্র তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে, যখন এদেশের মানুষ নিশ্চিতে, নির্বিঘ্নে, নির্ভয়ে তাঁর পবিত্র ভোট আমানত দিয়ে তাঁর পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারবে।
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, মানুষ গণতন্ত্র চায়, যেটা পেয়েছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে। সস্তির জীবন চায়, যেমনটা পেয়েছিল জিয়াউর ও খালেদা জিয়ার আমলে। তাঁরা উন্নয়নের দিকে এগুতে চায়, যেটা শুরু হয়েছিল জিয়াউর রহমানের আমলে। আমরা কখনো ভুলে যাবো না, আমাদের যারা শহীদ হয়েছে, গুম হয়েছে যারা, তাদের পরিবার পরিজনদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকালে দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এম রশিদুজ্জামান মিল্লাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নজরুল ইসলাম খান। এ জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপির চেয়ার পার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব এসএম আব্দুল হালিম, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ্ মো.ওয়ারেছ আলী মামুন, আব্দুল ওয়াহাব আকন্দ, জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম,বিএনপির নির্বাহী কমিটির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক নিলুফার চৌধুরী মনি, জলবায়ু বিষয়ক সহ-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাবেক সংসদ সদস্য ও নির্বাহী কমিটির সদস্য সুলতান মাহমুদ বাবু, উপজেলা বিনপির সদস্য ব্যারিস্টার শাহাদাৎ বিন জামান শোভন প্রমুখ।
এ সময় প্রধান অতিথি বলেন, ক্ষমতা না, দায়িত্ব নিতে চাই। দায়িত্ব এ কারনে নিতে চাই যে, আমার যে ভাইটা খুন হয়েছে তাঁর পরিবারকে সহযোগিতা করতে চাই। আমার যে ভাইটা গুম হয়েছে আমি তার মুক্তির চিন্তা করতে চাই। যাদের বিরুদ্ধে মামলা-মোকাদ্দমা হয়েছে, যারা কষ্ট করেছে আমি এটার পরিবর্তন চাই। আমি চাই আমার দেশের যে কৃষক তাদের উৎপাদিত সামগ্রীর নায্য মূল্য পায়নি, আমি তাদের নায্য মূল্য দিতে চাই। আমরা শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরি দিতে চাই।ভোক্তাদের ন্যায্য মূল্যে তাঁর নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য সামগ্রিই দিতে চাই। বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই। আপনাদের যে হুকুম বেকারদের ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে, আমরা চাকরী না হওয়া পর্যন্ত বেকারদের ভাতা দিতে চাই। জনসভার সভাপতি এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত বলেন, ইন্ডিয়ান যে চাল (ষড়যন্ত্র), ভারতীয় আগ্রাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য, প্রতিরোধ করার জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন, প্রতি পৌরসভা, প্রতিটি ওয়ার্ড ও কেন্দ্র ঐক্যবদ্ধ হয়ে আরও শক্তিশালী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।