ময়মনসিংহ ০২:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় গফরগাঁওয়ের দুই যুবক নিহত

সৌদিতে নিহত গফরগাঁওয়ের দুই যুবক।

 

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহের দুই যুবক নিহত হয়েছেন। নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মরদেহের অপেক্ষায় আছেন পরিবারের লোকজন। নিহতরা হলেন, জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকার পাইথল গ্রামের বদরুদ্দিন তোতা মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া (৩৮) এবং একই উপজেলার কুরচাই গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে ইকরাম (২৪)। এরা দুইজনেই শ্রমিক হিসেবে সৌদি আরবে কাজ করতেন। এর মধ্যে সুমন মিয়া এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক আর আবু সাঈদ এক সন্তানের জনক।

 

বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বিট অফিসারদের মাধ্যমে দু’জনের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। মরদেহ আনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি। গত ২১ ডিসেম্বর সৌদি আরব সময় সকাল ১১ টার দিকে মদিনা শহরে ময়লার গাড়িকে পিছন থেকে ৪ বাংলাদেশী শ্রমিক নিহত হয়। এতে আরও দুই জন আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সুত্র।

নিহত শ্রমিক ইকরামের বাবা আবু সাঈদ বলেন, আমার ছেলে ইকরাম এক সন্তানের বাবা। এক বছর আগে সংসারের হাল ধরতে সৌদি আরবের মদিনায় গিয়েছিলেন। সেখানে ইকরাম রাস্তা ক্লিনারের কাজ করতেন। ঘটনার দিন সকালে কাজ করে ময়লার গাড়িতে করে ৮/১০ জনকে নিয়ে নিজ বাসায় ফিরছিলেন। ফেরার পথে পেছন থেকে অন্য গাড়ি ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আমার ছেলে ইকরামসহ ৪ জন মারা যান। এসময় আহত হয় আরও দুই জন। ৪ জনের একজন আমার ছেলে ইকরাম। আরেকজন সুমন মিয়া পাইথল গ্রামের বাসিন্দা। অপর দুই জনের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার বাসিন্দা বলে জানতে পারছি। তিনি আরও বলেন, ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। ছেলের মা বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন। ছেলের স্ত্রী রুনা শোকে পাথর হয়ে গেছে। কারোর সাথে কোন কথা বলছে না। আমার ছেলের দুই বছরের এক সন্তান রয়েছে। সে শুধু সবার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। মরদেহ আনার জন্য কাগজপত্র তৈরী করছেন বলেও জানান তিনি।

নিহত ইকরামের বড় বোন শাহিনুর বলেন, আমি ঢাকাতে বসবাস করি। ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে বাড়িতে এসেছি। আমার ভাই ওই কাজে বের হওয়ার সময় সবার সাথে কথা বলেছে, কে কেমন আছে জানতে চাইছে। আমার সেই ভাই কথা বলার কয়েক ঘন্টা পরেই মারা গেছে। ভাই আর আমাদের সাথে কথা বলবে না।

 

পাইথল গ্রামের নিহত সুমনের চাচা শাহিন মিয়া বলেন, সুমন এক যুগ ধরে সৌদি আরবের মদিনায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করে আসছেন। গত দুই বছর আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিল। এভাবে তার মৃত্যু পরিবারের কেউ মেনে নিতে পারছে না। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। স্ত্রী সন্তানরা মরদেহের অপেক্ষায় আছে।

ট্যাগ :

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় গফরগাঁওয়ের দুই যুবক নিহত

পোষ্টের সময় : ০৫:২৫:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

 

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহের দুই যুবক নিহত হয়েছেন। নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মরদেহের অপেক্ষায় আছেন পরিবারের লোকজন। নিহতরা হলেন, জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকার পাইথল গ্রামের বদরুদ্দিন তোতা মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া (৩৮) এবং একই উপজেলার কুরচাই গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে ইকরাম (২৪)। এরা দুইজনেই শ্রমিক হিসেবে সৌদি আরবে কাজ করতেন। এর মধ্যে সুমন মিয়া এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক আর আবু সাঈদ এক সন্তানের জনক।

 

বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বিট অফিসারদের মাধ্যমে দু’জনের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। মরদেহ আনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি। গত ২১ ডিসেম্বর সৌদি আরব সময় সকাল ১১ টার দিকে মদিনা শহরে ময়লার গাড়িকে পিছন থেকে ৪ বাংলাদেশী শ্রমিক নিহত হয়। এতে আরও দুই জন আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সুত্র।

নিহত শ্রমিক ইকরামের বাবা আবু সাঈদ বলেন, আমার ছেলে ইকরাম এক সন্তানের বাবা। এক বছর আগে সংসারের হাল ধরতে সৌদি আরবের মদিনায় গিয়েছিলেন। সেখানে ইকরাম রাস্তা ক্লিনারের কাজ করতেন। ঘটনার দিন সকালে কাজ করে ময়লার গাড়িতে করে ৮/১০ জনকে নিয়ে নিজ বাসায় ফিরছিলেন। ফেরার পথে পেছন থেকে অন্য গাড়ি ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আমার ছেলে ইকরামসহ ৪ জন মারা যান। এসময় আহত হয় আরও দুই জন। ৪ জনের একজন আমার ছেলে ইকরাম। আরেকজন সুমন মিয়া পাইথল গ্রামের বাসিন্দা। অপর দুই জনের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার বাসিন্দা বলে জানতে পারছি। তিনি আরও বলেন, ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। ছেলের মা বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন। ছেলের স্ত্রী রুনা শোকে পাথর হয়ে গেছে। কারোর সাথে কোন কথা বলছে না। আমার ছেলের দুই বছরের এক সন্তান রয়েছে। সে শুধু সবার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। মরদেহ আনার জন্য কাগজপত্র তৈরী করছেন বলেও জানান তিনি।

নিহত ইকরামের বড় বোন শাহিনুর বলেন, আমি ঢাকাতে বসবাস করি। ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে বাড়িতে এসেছি। আমার ভাই ওই কাজে বের হওয়ার সময় সবার সাথে কথা বলেছে, কে কেমন আছে জানতে চাইছে। আমার সেই ভাই কথা বলার কয়েক ঘন্টা পরেই মারা গেছে। ভাই আর আমাদের সাথে কথা বলবে না।

 

পাইথল গ্রামের নিহত সুমনের চাচা শাহিন মিয়া বলেন, সুমন এক যুগ ধরে সৌদি আরবের মদিনায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করে আসছেন। গত দুই বছর আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিল। এভাবে তার মৃত্যু পরিবারের কেউ মেনে নিতে পারছে না। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। স্ত্রী সন্তানরা মরদেহের অপেক্ষায় আছে।