নেত্রকোনার দুর্গাপুরে পুলিশ সদস্য (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম (৪৫)কে হত্যায় গ্রেপ্তার দুইজন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নেত্রকোনা কার্যালয়ের পরিদর্শক ইমদাদুল বাশার। এর আগে রবিবার বিকাল ৫ টার দিক থেকে রাত ৮ টা নাগাদ ৩ ঘন্টাব্যাপী বিচারকের কাছে হত্যা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ওই দুই জন।
গ্রেপ্তার দুইজন হলেন- দুর্গাপুর উপজেলা সদরের উকিলপাড়া এলাকার শমশের আলী খাঁয়ের ছেলে সাজিবুল ইসলাম ওরফে অপূর্ব (২৪) ও ধানশিরা এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে মো. বাকী বিল্লাহ (২৬)। এই দুই যুবকের মধ্যে অপূর্ব পেশায় টিভি-ফ্রিজ মেকানিক ও বাকী বিল্লাহ মোটরসাইকেল গ্যারেজের মেকানিক।
জবানবন্দীর বরাত দিয়ে ইমদাদুল বাশার জানান, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে সোপর্দ করলে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিচারকের কাছে জবানবন্দি দেন দুই আসামী। পরে বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে দুর্গাপুর উপজেলার পৃথক দুটি স্থানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা কার্যালয়ে সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করেন।
হত্যাসংক্রান্ত একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে,সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে শফিকুল ইসলামকে তিনজন যুবক রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তারের নেতৃত্বে গত (১১ জানুয়ারি) শনিবার বিকেলে সাজিবুল ইসলাম ও মো. বাকী বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ময়মনসিংহ পিটিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার বলেন,ঘটনার পর থেকে আমরা ছায়া তদন্ত শুরু করি এবং ছায়া তন্তের সাপেক্ষে আমরা দুজনের সংশ্লিষ্টতার নিশ্চিত হয়ে তাদের আটক করি। এই হত্যাকান্ডে জড়িত আরো কয়েকজনকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। পূর্বশ্রুতার জের ধরেই এই হত্যাকান্ড হয়। তবে এই হত্যাকান্ডে আরো জড়িত যারা তাদের আইনের আওতায় আনতে পারলে নিশ্চিত রূপে পূর্ণাঙ্গভাবে জানাতে পারবো। তবে কেন, কী কারণে হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা তদন্তের স্বার্থে এখনি বলতে রাজি হননি তিনি।
জামালপুরে কর্মরত এসআই শফিকুল ইসলাম ছুটি নিয়ে গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) বাড়িতে আসেন। পরদিন বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তিনি দুর্গাপুর পৌর শহরের বাগিচাপাড়া এলাকার বাসা থেকে বের হওয়ার পর পথে উকিল পাড়া এলাকার পানমহালের একটি গলি সড়কে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে দুর্বৃত্তরা তাকে এলোপাথারি কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় শফিকুল ইসলামের বাবা বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতনামা ছয়জনকে আসামি করা হয়।