জামালপুরে পাওনা টাকা দেয়ার কথা বলে যুবককে ডেকে নিয়ে নির্মম নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। আর এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। গরু চুরির অপবাদ দিয়ে এমন নির্যাতনের প্রতিবাদে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী। তবে ঘটনার সাথে সাথে দুইজনকে আটক করলেও বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুরের যুবক মামুন। পেশায় রাজ মিস্ত্রী মামুন তার কাজের টাকা পেতেন একই এলাকার তালুকদার বাড়ির হাসমত তালুকদারের কাছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় সেই পাওনা টাকা দেয়ার কথা বলে মামুনকে ডেকে নেয়া হয় হাসমত তালুকদারের বাড়িতে। টাকা নিয়ে তর্ক বিতর্কের পর গরু চুরির অপবাদ দিয়ে সেখানে চলে মধ্য যুগীয় কায়দায় নির্যাতন। আর এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মামুনকে উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রথমে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। মামুনের মা মাজেদা বেগম বলেন- সন্ধ্যার আগে আমার ছেলে বাজার নিয়ে বাড়িতে আসার পথে হাসমত তালুকদার তাকে ফোন করে বলে তার পাওনা টাকা দিবে। টাকা নেয়ার জন্য গেলে তার সাথে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বাড়িতে ডাকাত, গরু চোর বলে চিৎকার করে লোকজনকে ডাকে। পরে আমার ছেলেকে ৫/৭ জন মিলে বাঁশের লাঠি,রড় দিয়ে মারধর করে। এরপর শরীরে রড ঢুকিয়েছে। আমার একটাই ছেলে সংসারে উপার্জনক্ষম। বাবা পাগল ওর ঘরে ২ সন্তান রয়েছে। আমি আমার ছেলেকে যারা মেরেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ফুসে উঠে এলাকাবাসী। দোষীদের বিচারের দাবিতে অবরোধ করে জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। এছাড়াও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা। ঘটনার পরপরই ভিডিও দেখে দুইজনকে আটক করলেও বাকীদের গ্রেপ্তারে কাজ করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিরা হলেন- মো: ইলিয়াস (২৫) ও মো: মিজানুর রহমান।
এই ঘটনায় জামালপুর থানায় ২১ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন আহতের বাবা আব্দুল হাকিম।
নারায়ণপুর পুলিশ তদন্তের উপ-পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুরুল হক বলেন, ৯৯৯-এ চোর আটকের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে ঘটনা জানতে পারি। তাকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। আমরা ২ জনকে আটক করেছি। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।