ময়মনসিংহ ০৩:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচিত হয়ে আসলে জাতীয় সরকার গঠন করে দেশ চালাবো : মির্জা ফখরুল

বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচিত হয়ে আসলে আমরা একা দেশ চালাবো না। আমরা একটি জাতীয় সরকার গড়ে, যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিল তাদের নিয়ে দেশ চালাবো। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সন্দেহটা কোথায়?

সন্দেহ কিন্তু আপনাদের ওপর আসতে শুরু করেছে। আমরা তো চাই, সরকার সাফল্য অর্জন করুক, তাদের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য। তারা ব্যর্থ হলে আমরা ব্যর্থ হবো। আমরা চাই না— শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসুক। আমরা চাই না, আওয়ামী লীগের দুঃশাসন আবার ফিরে আসুক।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা, গণতন্ত্রের জন্য স্পেস তৈরি করা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা মাধ্যমেই তো আমরা সংস্কারের ৩১ দফা তুলে ধরেছি। এখন নতুন যারা আসছেন তারা একেকজন একেক কথা বলে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন, তারা তো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাও নেই। আসলে রাজনীতি তো একটি সায়েন্স, এজন্যই তো বলা হয় পলিটিক্যাল সায়েন্স। বিএনপি কী ক্ষমতার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে? না, দ্রুত নির্বাচন দিলেই দেশের অনেক সমস্যায় সমাধান হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার পার্লামেন্টারি গভর্নমেন্ট ঘোষণার মধ্য দিয়েই স্বৈরাচার এরশাদকে সরানো গেছে। শেখ হাসিনা যখন কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট বাতিল করলো, তখন আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি। এটা কী অসত্য? কেন পারলাম না? ১৫ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে আমরা তাকে সরাতে পারিনি। তবে ফাইনাল গোলটা কিন্তু ছেলেরা দিয়েছে। এটা তো স্বীকার করতেই হবে আমাদেরকে।’

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের গতকালের (সোমবার) আন্দোলন প্রসঙ্গে মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের ইন্টেলিজেন্সের ভেতরে কী কোনও তথ্য ছিল না? তারা কী এর ব্যবস্থা আগে নিতে পারতেন না? আসলে গভর্নমেন্টটা এখনও স্ট্যাবল হতে পারেনি। তাই বলছি, নির্বাচন কমিশন ঠিক করে নির্বাচন দেন, একটি রোড ম্যাপ ঘোষণা দেন, কবে কী করবেন জানান। তাহলে মানুষের মনে আস্থা আসবে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছেন, অনেকে বলাবলি করেন— এজন্যই কি সংগ্রাম করেছি? এতে করে আমাদের শত্রুরা সুযোগ নেবে।’

সরকার থেকে বিভিন্ন কথা বলা হচ্ছে। তবে আমি বলতে চাই, যেকোনও একদিকে ফোকাস দিন। পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন।’ বাকি সংস্কারগুলো নির্বাচিত হয়ে যারা আসবেন তারা করবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় এই নেতা।

দেশের শিক্ষা কাঠামোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আমরা কী সাফল্য অর্জন করেছি শিক্ষা খাতে? বিশ্বের এক হাজার ইউনিভার্সিটির তালিকার মধ্যে আমাদের একটি ইউনিভার্সিটির নামও আসে না। এর কারণ আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি না। আর দেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছে শেখ হাসিনা। দেশের সব অর্জন ১৫ বছর শেষ করেছে সে। এখন আমাদের দরকার ইস্পাত কঠিন ঐক্য।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএসপিপি-এর আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়া, ড্যাবের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. আজিজুল হক, ড্যাবের সভাপতি ড. হারুন আল রশীদ, প্রফেসর ড. আবু আহমেদ প্রমুখ।

ট্যাগ :

দৈনিক ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসের এক দশকে পদার্পণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার

নির্বাচিত হয়ে আসলে জাতীয় সরকার গঠন করে দেশ চালাবো : মির্জা ফখরুল

পোষ্টের সময় : ০৪:২৯:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচিত হয়ে আসলে আমরা একা দেশ চালাবো না। আমরা একটি জাতীয় সরকার গড়ে, যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিল তাদের নিয়ে দেশ চালাবো। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সন্দেহটা কোথায়?

সন্দেহ কিন্তু আপনাদের ওপর আসতে শুরু করেছে। আমরা তো চাই, সরকার সাফল্য অর্জন করুক, তাদের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য। তারা ব্যর্থ হলে আমরা ব্যর্থ হবো। আমরা চাই না— শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসুক। আমরা চাই না, আওয়ামী লীগের দুঃশাসন আবার ফিরে আসুক।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা, গণতন্ত্রের জন্য স্পেস তৈরি করা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা মাধ্যমেই তো আমরা সংস্কারের ৩১ দফা তুলে ধরেছি। এখন নতুন যারা আসছেন তারা একেকজন একেক কথা বলে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন, তারা তো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাও নেই। আসলে রাজনীতি তো একটি সায়েন্স, এজন্যই তো বলা হয় পলিটিক্যাল সায়েন্স। বিএনপি কী ক্ষমতার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে? না, দ্রুত নির্বাচন দিলেই দেশের অনেক সমস্যায় সমাধান হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার পার্লামেন্টারি গভর্নমেন্ট ঘোষণার মধ্য দিয়েই স্বৈরাচার এরশাদকে সরানো গেছে। শেখ হাসিনা যখন কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট বাতিল করলো, তখন আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি। এটা কী অসত্য? কেন পারলাম না? ১৫ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে আমরা তাকে সরাতে পারিনি। তবে ফাইনাল গোলটা কিন্তু ছেলেরা দিয়েছে। এটা তো স্বীকার করতেই হবে আমাদেরকে।’

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের গতকালের (সোমবার) আন্দোলন প্রসঙ্গে মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের ইন্টেলিজেন্সের ভেতরে কী কোনও তথ্য ছিল না? তারা কী এর ব্যবস্থা আগে নিতে পারতেন না? আসলে গভর্নমেন্টটা এখনও স্ট্যাবল হতে পারেনি। তাই বলছি, নির্বাচন কমিশন ঠিক করে নির্বাচন দেন, একটি রোড ম্যাপ ঘোষণা দেন, কবে কী করবেন জানান। তাহলে মানুষের মনে আস্থা আসবে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছেন, অনেকে বলাবলি করেন— এজন্যই কি সংগ্রাম করেছি? এতে করে আমাদের শত্রুরা সুযোগ নেবে।’

সরকার থেকে বিভিন্ন কথা বলা হচ্ছে। তবে আমি বলতে চাই, যেকোনও একদিকে ফোকাস দিন। পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন।’ বাকি সংস্কারগুলো নির্বাচিত হয়ে যারা আসবেন তারা করবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় এই নেতা।

দেশের শিক্ষা কাঠামোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আমরা কী সাফল্য অর্জন করেছি শিক্ষা খাতে? বিশ্বের এক হাজার ইউনিভার্সিটির তালিকার মধ্যে আমাদের একটি ইউনিভার্সিটির নামও আসে না। এর কারণ আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি না। আর দেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছে শেখ হাসিনা। দেশের সব অর্জন ১৫ বছর শেষ করেছে সে। এখন আমাদের দরকার ইস্পাত কঠিন ঐক্য।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএসপিপি-এর আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়া, ড্যাবের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. আজিজুল হক, ড্যাবের সভাপতি ড. হারুন আল রশীদ, প্রফেসর ড. আবু আহমেদ প্রমুখ।