ইসলামপন্থি হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) বিদ্রোহীদের নেতৃত্বে একটি বড় ধরনের আক্রমণে তাদের ডজন ডজন সেনা নিহত হওয়ার জেরে সিরিয়ার সেনাবাহিনী উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আলেপ্পো থেকে অস্থায়ীভাবে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে সমর্থন করতে তাদের বিমানবাহিনী বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বিদ্রোহীরা আলেপ্পো শহরে প্রবেশ করেছে, যা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের জন্য বছরের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তবে রুশ সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, সরকারি বাহিনীর সমর্থনে বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া। মূলত ২০২০ সাল থেকেই সিরিয়ায় যুদ্ধরত উভয়পক্ষই শান্ত ছিল।
তবে সম্প্রতি বিদ্রোহীদের অগ্রগতির কথা স্বীকার করে সিরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিদ্রোহীরা আলেপ্পোর অনেক অংশে প্রবেশ করেছে।তারা আলেপ্পো বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এছাড়া তারা ইদলিব প্রদেশের মারাত আল-নুমান শহর দখল করেছে বলে দাবি করেছে দুটি নিরাপত্তা সূত্র।
শনিবারের চিত্রে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রয়াত ভাই বাসিল আল-আসাদের উল্টে যাওয়া একটি মূর্তির পাশে ছবি তুলছে লোকজন। বিদ্রোহীরা ট্রাকে করে শহরজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। আলেপ্পোর ঐতিহাসিক দুর্গের কাছে দাঁড়িয়ে বিরোধীদের পতাকা নাড়াতেও দেখা গেছে।
সরকারপন্থি সংবাদপত্র আল-ওয়াতান জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের সমাবেশ এবং বহর লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।
এই লড়াই সিরিয়ার দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতকে আবারও উসকে দিয়েছে, এমন সময়ে যখন গাজা ও লেবাননে যুদ্ধ চলছে।
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ জানিয়েছে যে তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র শন সাভেট বলেছেন, জাতিসংঘের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে সিরিয়ার অস্বীকৃতি এবং রাশিয়া ও ইরানের উপর নির্ভরতা এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, যার ফলে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় আসাদ বাহিনীর পতন ঘটেছে।
২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারায় কয়েক লাখ মানুষ। বাস্ত্যুচ্যুত হয় অনেকে। তবে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাস চুক্তি হওয়ার পর থেকে উত্তর পশ্চিম সিরিয়ায় বড় ধরনের যুদ্ধ কয়েক বছর আগে থেমে গিয়েছিল।