ময়মনসিংহ ০২:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্টের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল ( ফাইল ছবি )

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের ওপর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সামরিক শাসন জারির ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর দেশটির নেতৃত্ব সংকট গভীর হওয়ার প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

সামরিক আইন জারির চেষ্টার জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ইউন। নিজের রাজনৈতিক ও আইনি ভবিষ্যৎ তার দল পিপলস পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। তবে তিনি এখনও পদত্যাগ করেননি। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, তিনি বর্তমানে একটি ফৌজদারি তদন্তের আওতায় রয়েছেন।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে, ইউন আইনগতভাবে এখনও কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে বহাল রয়েছেন। তবে সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ তার ক্ষমতা ধরে রাখাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

দুর্নীতি তদন্ত সংস্থার প্রধান ওহ ডং-উন জানিয়েছেন, ইউনের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বিচার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বায়ে সাং-উপ জানিয়েছেন, এই আদেশ ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।

২০২১ সালে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনার জন্য এই সংস্থাটি গঠন করা হয়। তবে সংস্থাটি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার ক্ষমতা রাখে না। আইন অনুসারে, এটি প্রসিকিউটরদের কাছে বিষয়টি হস্তান্তর করতে বাধ্য।

শনিবার পার্লামেন্টে অভিশংসন প্রশ্নে পার পেয়ে গেলেও, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তরের দলীয় সিদ্ধান্ত দেশটিকে সাংবিধানিক সংকটে ফেলে দিয়েছে। ইউন পদত্যাগের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে গত সপ্তাহান্তে তার ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে, যখন স্থানীয় গণমাধ্যম তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ফৌজদারি তদন্তের খবর প্রকাশ করে।

রবিবার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউনকে গ্রেফতার করেছে কর্তৃপক্ষ। ডিসেম্বরের ৩ তারিখে সামরিক শাসন জারি ঘোষণায় তার ভূমিকার জন্য তাকে দায়ী করা হয়েছে।
ডিসেম্বরের ৩ তারিখে ইউন সামরিক বাহিনীকে জরুরি ক্ষমতা দেন। তিনি একে রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে সংসদীয় ভোটের পর এই আদেশ ছয় ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়।

এ ঘটনা পর, সামরিক বাহিনীর অনেক কর্মকর্তা, এমনকি ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রীও নতুন করে সামরিক আইন জারি করা হলে তা মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিপি) ইউনের সামরিক বাহিনীর ওপর কর্তৃত্ব বাতিলের দাবি জানিয়েছে। তারা ইউন ও এই সংকটে জড়িত সামরিক কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের দাবি তোলে।

ইউনের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে গঠিত টাস্ক ফোর্সের প্রধান লি ইয়াং-সু জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের পদচ্যুতির সময় ও পদ্ধতি নিয়ে তারা সব ধরনের বিকল্প বিবেচনা করবেন।

ট্যাগ :
অধিক পঠিত

দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্টের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

পোষ্টের সময় : ০৭:৪৬:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের ওপর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সামরিক শাসন জারির ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর দেশটির নেতৃত্ব সংকট গভীর হওয়ার প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

সামরিক আইন জারির চেষ্টার জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ইউন। নিজের রাজনৈতিক ও আইনি ভবিষ্যৎ তার দল পিপলস পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। তবে তিনি এখনও পদত্যাগ করেননি। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, তিনি বর্তমানে একটি ফৌজদারি তদন্তের আওতায় রয়েছেন।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে, ইউন আইনগতভাবে এখনও কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে বহাল রয়েছেন। তবে সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ তার ক্ষমতা ধরে রাখাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

দুর্নীতি তদন্ত সংস্থার প্রধান ওহ ডং-উন জানিয়েছেন, ইউনের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বিচার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বায়ে সাং-উপ জানিয়েছেন, এই আদেশ ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।

২০২১ সালে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনার জন্য এই সংস্থাটি গঠন করা হয়। তবে সংস্থাটি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার ক্ষমতা রাখে না। আইন অনুসারে, এটি প্রসিকিউটরদের কাছে বিষয়টি হস্তান্তর করতে বাধ্য।

শনিবার পার্লামেন্টে অভিশংসন প্রশ্নে পার পেয়ে গেলেও, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তরের দলীয় সিদ্ধান্ত দেশটিকে সাংবিধানিক সংকটে ফেলে দিয়েছে। ইউন পদত্যাগের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে গত সপ্তাহান্তে তার ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে, যখন স্থানীয় গণমাধ্যম তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ফৌজদারি তদন্তের খবর প্রকাশ করে।

রবিবার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউনকে গ্রেফতার করেছে কর্তৃপক্ষ। ডিসেম্বরের ৩ তারিখে সামরিক শাসন জারি ঘোষণায় তার ভূমিকার জন্য তাকে দায়ী করা হয়েছে।
ডিসেম্বরের ৩ তারিখে ইউন সামরিক বাহিনীকে জরুরি ক্ষমতা দেন। তিনি একে রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে সংসদীয় ভোটের পর এই আদেশ ছয় ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়।

এ ঘটনা পর, সামরিক বাহিনীর অনেক কর্মকর্তা, এমনকি ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রীও নতুন করে সামরিক আইন জারি করা হলে তা মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিপি) ইউনের সামরিক বাহিনীর ওপর কর্তৃত্ব বাতিলের দাবি জানিয়েছে। তারা ইউন ও এই সংকটে জড়িত সামরিক কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের দাবি তোলে।

ইউনের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে গঠিত টাস্ক ফোর্সের প্রধান লি ইয়াং-সু জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের পদচ্যুতির সময় ও পদ্ধতি নিয়ে তারা সব ধরনের বিকল্প বিবেচনা করবেন।