আলোচিত পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দায়ে শেখ হাসিনা ও তৎকালীন সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদসহ ৫৮ জনের নাম উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শহীদ সেনা সদস্যদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে আইনজীবী তাসমিরুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর এ অভিযোগ দাখিল করেন।
পরে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থবিরোধী রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুই শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, তথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) ধ্বংসের নীলনকশা প্রণয়ন করে। সেই লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সর্বপ্রথম শিকারে পরিণত হয় বাংলাদেশ রাইফেলসে সেসময় কর্মরত পেশাদার, সৎ-দক্ষ, মেধাবী ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর অফিসারদের একটি অংশ। শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীর সেসব দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের নিজের স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে প্রথম ও প্রধানতম অন্তরায়-বিপত্তি হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি ওই সেনা অফিসারদের এবং তাদের পরিবারের ওপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করে নিজের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার পরিকল্পনা করেন। সাবেক অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নেতৃত্বে, পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অন্য আসামিরা ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানী পিলখানা সদর দফতরে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালায়। এই ঘটনায় মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান।
তারা জানান, আমাদের দেশপ্রেমিক আপামর বীর ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা আরও একবার নতুন করে স্বাধীনতা লাভ করি। ফিরে পেয়েছি বাক স্বাধীনতা। আজকে নতুন করে পেয়েছি বাঁচার আশা। সরকারের প্রতি আমাদের আকুল আবেদন পিলখানা গণহত্যার তদন্ত ও বিচার সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে দায়েরকৃত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে যেসব নিরীহ, নিরপরাধ ও নির্দোষ বিডিআর জওয়ানদের বছরের পর বছর কারাগারে আটক রাখা হয়েছে, তাদেরকে মুক্তি প্রদানে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করে মানবিক দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করবেন। আমরা একইসঙ্গে ২৪ এর জুলাই আন্দোলনসহ বিগত ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার সব শহীদ, আহত- পঙ্গু ও গুম হওয়া ব্যক্তিদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি ও অনুরোধ জানাচ্ছি।