ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের কচুরী গ্রামের আবুল কালামের মাদ্রাসা পড়ুয়া ১০ম শ্রেণির ছাত্রী পাপিয়াকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ৩মাস আটকে রেখে ধর্ষন ও নির্যাতনের স্বীকার হয়ে গত ১৬ডিসেম্বর মৃত্যু বরণ করেন।
অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হোসাইনকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘ নান্দাইলের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি আঃ হান্নান আল আজাদের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সারোয়ার জাহান রাজিবের পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘ, ময়মনসিংহের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ, সাংবাদিক এনামুল হক বাবুল, সাংবাদিক আলম ফরাজি, পাপিয়ার পিতা আবুল কালাম, ভাই মোঃ রাজিব, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বাবুল, সংগঠনের সদস্য হুমাইরা আক্তার সুমি, পাপিয়া সুলতানা পপি, বিলকিস জাহান, আর্জুন জান্নাত মাইদা, মেহেদী হাসান শুভ, মোঃ হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, হিংস্র হোসাইন গত ০১ জুন ২০২৪ তারিখে মাদ্রাসাছাত্রী পাপিয়াকে অপহরণ করে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যায়। তাকে তিন মাস আটক রেখে বার বার ধর্ষন করেন এবং অমানষিকভাবে নির্যাতন করা হয় এবং তার একটি চোখ নষ্ট করে দেন। পরবর্তীতে গত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ রাতে এলাকায় এসে ফেলে চলে যায়। এ সংবাদ পেয়ে পাপিয়ার অভিভাবকগন তকে উদ্ধার করে চিকিৎসাার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরবর্তীতে পাপিয়ার অভিভাবকগন নান্দাইল মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করেনি।
এমতাবস্থায় পাপিয়ার অভিভাবকগন ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর আদালত কর্তৃক মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই ময়মনসিংহকে দায়িত্ব প্রদান করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোসলেম উদ্দিন যথাসময়ে ও যথাযথভাবে মামলাটির তদন্ত না করে কালক্ষেপন করে, যা দায়িত্বের অবহেলার সামিল। এই দায়িত্ব অবহেলার জন্য অভিযুক্ত হোসাইন অদ্যবধি গ্রেপ্তার হয়নি। আমরা মনে করি, পিবিআই ও নান্দাইল থানা পুলিশের দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে আসামী অদ্যবধি গ্রেপ্তার হয়নি।
বক্তারা আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাপিয়ার হত্যাকারী হোসাইনকে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নিশ্চিত করতে হবে। তা নাহলে নান্দাইলের সচেতন নাগরিক সমাজ হরতাল সহ দুর্বার ও ধারাবাহিক আন্দোলন গড়ে তুলবে। আমরা জানতে পেরেছি, পিবিআই’র দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মোসলেম উদ্দিন পাপিয়ার অসহায় পিতা মো: আবুল কালামের নিকট হতে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে। গ্রহণকৃত ঘুষের টাকা নান্দাইলের সচেতন নাগরিকদের উপস্থিতিতে পাপিয়ার পিতাকে ফেরত দিতে হবে এবং ঘুষ গ্রহনের অপরাধে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে হত্যাকারী হোসাইনের ফাঁসির দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল নান্দাইল উপজেলা চত্বর হতে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়।