০৭:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিসিএস লিখিত পরীক্ষা থেকে গণিত বাদ দেওয়ার সুপারিশের প্রতিবাদ

  • RA
  • পোষ্টের সময় : ০৭:১৮:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
  • ৫৩ ভিউ :

বাংলাদেশ গণিত সমিতি বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস থেকে গণিত বাদ দেওয়ার সুপারিশের প্রতিবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি, সংগঠনটি গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা বিষয়টি বহাল রাখার দাবিও জানিয়েছে।

রবিবার (২৩ মার্চ) পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবাদলিপি জমা দেয় বাংলাদেশ গণিত সমিতি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো: শহীদুল ইসলাম এবং সম্পাদক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বাবুল হাসান।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস পরিবর্তন করে ছয়টি আবশ্যিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে পরীক্ষার নম্বর পুনর্বণ্টনপূর্বক গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা বিষয় সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশন ছয়টি আবশ্যিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে নম্বর পুনর্বণ্টনের যে সুপারিশ করেছে, তাতে গণিতের মত গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যকীয় বিষয় নেই। এটি বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক সমাজ গঠনের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়।’

এতে বলা হয়, ‘জ্ঞান বিজ্ঞানের বিকাশে গণিতের ভূমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ । পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন গণিত ছাড়া অচল। গাণিতিক হিসাব নিকাশ ব্যতীত একটি রাষ্ট্রের বাজেট থেকে শুরু করে যে কোন ছোট বড় দেশীয় বা বৈশ্বিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা অসম্ভব। কম্পিউটার বিজ্ঞান, পদার্থ ও রসায়ন ইত্যাদি বিজ্ঞানের সকল বিষয়ের সারবস্তু হলো গণিত। গণিত একটি মৌলিক ও অপরিহার্য বিষয়, যা প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ নীতি নির্ধারণ, আর্থিক পরিকল্পনা, পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ এবং সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গণিত ও মানসিক দক্ষতার চর্চা একজন সরকারি কর্মকর্তাকে যৌক্তিক ও বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাভাবনায় দক্ষ করে তোলে। প্রশাসনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে, জনশুমারি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিশ্লেষণ, কর ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে গণিত অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।’

 

 

প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘যাঁরা গণিত চর্চা করেন বা গণিতের জ্ঞান যাঁদের মজবুত, প্রতিনিয়ত তাঁদের মেধার বিকাশ ঘটে ও বিশ্লেষণ করার দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং সেইসাথে অভিজ্ঞতা যুক্ত হলে প্রার্থী আরো চৌকষ হয়। বিসিএস পরীক্ষার্থীদের গণিতের জ্ঞান থাকা আবশ্যক এবং এ বিষয়ে তাঁর দক্ষতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। গণিত বিষয়কে শুধুমাত্র নম্বর বেশী পাবার বা অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত না করে এটিকে মেধাবৃত্তিক বিশ্লেষণ করার দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করার জন্য দৃঢ় আহ্বান জানাচ্ছি।’

 

এতে আরও বলা হয়, ‘বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের পাশাপাশি বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষার্থীদের বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি সুদক্ষ বিসিএস কর্মকর্তা হয়ে দেশকে সেবাদানের লক্ষ্যে গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা বিষয়সমূহ সিলেবাস থেকে বাদ না দিয়ে বহাল রাখার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’

ট্যাগ :
অধিক পঠিত

বিসিএস লিখিত পরীক্ষা থেকে গণিত বাদ দেওয়ার সুপারিশের প্রতিবাদ

পোষ্টের সময় : ০৭:১৮:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশ গণিত সমিতি বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস থেকে গণিত বাদ দেওয়ার সুপারিশের প্রতিবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি, সংগঠনটি গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা বিষয়টি বহাল রাখার দাবিও জানিয়েছে।

রবিবার (২৩ মার্চ) পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবাদলিপি জমা দেয় বাংলাদেশ গণিত সমিতি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো: শহীদুল ইসলাম এবং সম্পাদক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বাবুল হাসান।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস পরিবর্তন করে ছয়টি আবশ্যিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে পরীক্ষার নম্বর পুনর্বণ্টনপূর্বক গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা বিষয় সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশন ছয়টি আবশ্যিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে নম্বর পুনর্বণ্টনের যে সুপারিশ করেছে, তাতে গণিতের মত গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যকীয় বিষয় নেই। এটি বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক সমাজ গঠনের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়।’

এতে বলা হয়, ‘জ্ঞান বিজ্ঞানের বিকাশে গণিতের ভূমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ । পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন গণিত ছাড়া অচল। গাণিতিক হিসাব নিকাশ ব্যতীত একটি রাষ্ট্রের বাজেট থেকে শুরু করে যে কোন ছোট বড় দেশীয় বা বৈশ্বিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা অসম্ভব। কম্পিউটার বিজ্ঞান, পদার্থ ও রসায়ন ইত্যাদি বিজ্ঞানের সকল বিষয়ের সারবস্তু হলো গণিত। গণিত একটি মৌলিক ও অপরিহার্য বিষয়, যা প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ নীতি নির্ধারণ, আর্থিক পরিকল্পনা, পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ এবং সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গণিত ও মানসিক দক্ষতার চর্চা একজন সরকারি কর্মকর্তাকে যৌক্তিক ও বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাভাবনায় দক্ষ করে তোলে। প্রশাসনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে, জনশুমারি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিশ্লেষণ, কর ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে গণিত অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।’

 

 

প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘যাঁরা গণিত চর্চা করেন বা গণিতের জ্ঞান যাঁদের মজবুত, প্রতিনিয়ত তাঁদের মেধার বিকাশ ঘটে ও বিশ্লেষণ করার দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং সেইসাথে অভিজ্ঞতা যুক্ত হলে প্রার্থী আরো চৌকষ হয়। বিসিএস পরীক্ষার্থীদের গণিতের জ্ঞান থাকা আবশ্যক এবং এ বিষয়ে তাঁর দক্ষতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। গণিত বিষয়কে শুধুমাত্র নম্বর বেশী পাবার বা অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত না করে এটিকে মেধাবৃত্তিক বিশ্লেষণ করার দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করার জন্য দৃঢ় আহ্বান জানাচ্ছি।’

 

এতে আরও বলা হয়, ‘বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের পাশাপাশি বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষার্থীদের বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি সুদক্ষ বিসিএস কর্মকর্তা হয়ে দেশকে সেবাদানের লক্ষ্যে গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা বিষয়সমূহ সিলেবাস থেকে বাদ না দিয়ে বহাল রাখার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’