০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে খালেদা জিয়া স্থাপিত ভিত্তিপ্রস্তর ফলক ১৭ বছর পর উন্মোচিত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন বেগম খালেদা জিয়া স্থাপিত ভিত্তিপ্রস্তর ফলক ১৭ বছর আড়াল করে রাখা হয়েছিল। রবিবার সেটিকে সংস্কার শেষে উন্মোচন করা হয়। ছবি- ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস।

 

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয় ২০০৫ সালে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুল ফটকে এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও বর্তমানে এটি রয়েছে ক্যাম্পাসের সীমানার বাহিরে পরিত্যক্ত ময়লা আবর্জনার স্তুপে।

কালের পরিক্রমায় ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার এই স্থাপনাকে আড়াল করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুল গেইট সরিয়ে এই ভিত্তিপ্রস্তর রেখে দেয় ক্যাম্পাসের বাহিরে। ২০১২ সালে তৎকালীন প্রশাসন এখানে ময়লা আবর্জনার স্তুপ রেখে এ ফলকটি ঢেকে দিলেও ২০১৬ সালে সেই সময়ের ভিসি ফলকটিকে পিছনে রেখে ছাত্রী হল নির্মান করে। সর্বশেষ ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মান করে এই ফলকটিকে ক্যাম্পাসের বাহিরে রেখে দেয়।

৫ আগষ্ট ফ্যাসিষ্ট সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ডা. মাহবুবুর লিটন ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এই ফলকটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। রবিবার নজরুল জন্মজয়ন্তীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর এই ফলক নতুন করে উন্মোচন করেন বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ,নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম, সিন্ডিকেট সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন এই ফলক উন্মোচন করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা কেরামত হোসেন আকন্দ বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছোট বেলায় নামাপাড়া বটতলায় বাশি বাজাতেন। সেই সৃতিকে ধরে রাখতেই ত্রিশালে এত আয়োজন আর এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই বটতলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে সরকার পরিবর্তনের পর এই ফলক ক্যাম্পাসের বাহিরে রাখার জন্যে ঐতিহ্যবাহী বটতলাকেও ক্যাম্পাস থেকে আলাদা করে রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধরনের সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালেও বিশ্বদ্যিালয় প্রশাসন গুরুত্ব দেয়নি। ভিত্তির প্রস্তর আড়ালের জন্যে নজরুল ঐতিহ্যবাহী বটতলাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা দুঃখজনক।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন বলেন, ত্রিশাল তথা বৃহত্তর ময়মনসিংহ নজরুল প্রেমীদের দাবীর প্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নজরুলের সৃতি বিজরীত বটতলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন। তার এই ফলকটি গত ১৭ বছর ময়লাস্তুপ দিয়ে ঢেকেই রাখেনি শুধু ফলকটিকে বাহিরে রাখতে ক্যাম্পাসের সীমানা পরিবর্তন করে বাউন্ডারী দিয়ে ফলকটি বাহিরে রেখে দেয়।

দীর্ঘ ১৭ বছল পর দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে নয় একজন ত্রিশালবাসী হিসেবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্যে এই ফলকটি সংরক্ষনের উদ্যোগ গ্রহন করি।

স্থানীয় নিরলস সহযোগিতায় এই কাজটি বাস্তবায়ন করেছি। আমি ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নজরুলের সৃতি বিজরীত বটতলাকে ক্যাম্পাসের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানিয়েছে।

 

 

ট্যাগ :

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে খালেদা জিয়া স্থাপিত ভিত্তিপ্রস্তর ফলক ১৭ বছর পর উন্মোচিত

পোষ্টের সময় : ০৭:৪৬:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

 

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয় ২০০৫ সালে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুল ফটকে এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও বর্তমানে এটি রয়েছে ক্যাম্পাসের সীমানার বাহিরে পরিত্যক্ত ময়লা আবর্জনার স্তুপে।

কালের পরিক্রমায় ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার এই স্থাপনাকে আড়াল করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুল গেইট সরিয়ে এই ভিত্তিপ্রস্তর রেখে দেয় ক্যাম্পাসের বাহিরে। ২০১২ সালে তৎকালীন প্রশাসন এখানে ময়লা আবর্জনার স্তুপ রেখে এ ফলকটি ঢেকে দিলেও ২০১৬ সালে সেই সময়ের ভিসি ফলকটিকে পিছনে রেখে ছাত্রী হল নির্মান করে। সর্বশেষ ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মান করে এই ফলকটিকে ক্যাম্পাসের বাহিরে রেখে দেয়।

৫ আগষ্ট ফ্যাসিষ্ট সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ডা. মাহবুবুর লিটন ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এই ফলকটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। রবিবার নজরুল জন্মজয়ন্তীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর এই ফলক নতুন করে উন্মোচন করেন বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ,নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম, সিন্ডিকেট সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন এই ফলক উন্মোচন করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা কেরামত হোসেন আকন্দ বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছোট বেলায় নামাপাড়া বটতলায় বাশি বাজাতেন। সেই সৃতিকে ধরে রাখতেই ত্রিশালে এত আয়োজন আর এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই বটতলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে সরকার পরিবর্তনের পর এই ফলক ক্যাম্পাসের বাহিরে রাখার জন্যে ঐতিহ্যবাহী বটতলাকেও ক্যাম্পাস থেকে আলাদা করে রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধরনের সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালেও বিশ্বদ্যিালয় প্রশাসন গুরুত্ব দেয়নি। ভিত্তির প্রস্তর আড়ালের জন্যে নজরুল ঐতিহ্যবাহী বটতলাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা দুঃখজনক।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন বলেন, ত্রিশাল তথা বৃহত্তর ময়মনসিংহ নজরুল প্রেমীদের দাবীর প্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নজরুলের সৃতি বিজরীত বটতলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন। তার এই ফলকটি গত ১৭ বছর ময়লাস্তুপ দিয়ে ঢেকেই রাখেনি শুধু ফলকটিকে বাহিরে রাখতে ক্যাম্পাসের সীমানা পরিবর্তন করে বাউন্ডারী দিয়ে ফলকটি বাহিরে রেখে দেয়।

দীর্ঘ ১৭ বছল পর দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে নয় একজন ত্রিশালবাসী হিসেবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্যে এই ফলকটি সংরক্ষনের উদ্যোগ গ্রহন করি।

স্থানীয় নিরলস সহযোগিতায় এই কাজটি বাস্তবায়ন করেছি। আমি ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নজরুলের সৃতি বিজরীত বটতলাকে ক্যাম্পাসের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানিয়েছে।