আড্ডা বা অবসরের মুহূর্তে মুখ চালানোর জন্য বহু বাঙালির প্রিয় সঙ্গী চিনেবাদাম। এক সময় প্রেমিকার পাশে বসে পার্কে বাদাম ফাটানো কিংবা বিকেলের আড্ডায় বন্ধুর সঙ্গে ভাগ করে খাওয়া ছিল নিত্য দৃশ্য। সময় বদলেছে, কিন্তু বাদামের প্রতি বাঙালির টান আজও অটুট। শুধু স্বাদের কারণে নয়, বর্তমানে বহু মানুষ স্বাস্থ্যসচেতনতার কারণেও বাদামকে জায়গা দিচ্ছেন তাঁদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায়।
চিনেবাদাম কেবল মুখরোচকই নয়, বরং শরীরের নানা উপকার করে। প্রতিদিন পরিমাণমতো বাদাম খেলে শরীর ও ত্বক—উভয়ই পেতে পারে উপকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের পাঁচটি উপকারিতার কথা জেনে আপনি হয়তো আরও উৎসাহিত হবেন এই অভ্যাস বজায় রাখতে।
১। হৃদ্যন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে
চিনেবাদামে রয়েছে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা ‘ভাল চর্বি’ হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি এতে রয়েছে নিয়াসিন, ম্যাগনেশিয়াম এবং কপার—এই পুষ্টিগুণগুলি একযোগে কাজ করে হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষায়। নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমে।
২। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে
চিনেবাদামে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ খুব কম, অথচ ফাইবার বা খাদ্যতন্তু রয়েছে প্রচুর। এই কারণেই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযোগী। বাদাম রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ বাড়তে দেয় না, ফলে ব্লাড সুগার থাকে নিয়ন্ত্রিত।
৩। নিরামিষ প্রোটিনের উৎকৃষ্ট উৎস
যাঁরা প্রাণিজ প্রোটিন খান না বা খেতে চান না, তাঁদের জন্য চিনেবাদাম হতে পারে আদর্শ বিকল্প। এটি উদ্ভিজ উৎস থেকে পাওয়া একটি চমৎকার প্রোটিন, যা শরীরের পেশিগুলিকে শক্তিশালী ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৪। হাড়ের গঠনে সহায়ক
চিনেবাদামে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস এবং আরও কয়েকটি প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান। এই খনিজগুলি হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে এবং হাড়কে মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫। ত্বকের যত্নে উপকারী
চিনেবাদামে থাকা জিঙ্ক, ভিটামিন ই এবং সি—এই তিন উপাদান নিয়মিত শরীরে গেলে ত্বকে কোলাজেনের পরিমাণ বাড়ে। ফলে ত্বক থাকে টানটান, উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যবান।
তাই প্রতিদিন বিকেলের জলখাবারে কিংবা দিনের অন্য কোনও সময়ে একমুঠো চিনেবাদাম রাখলে শরীর যেমন পাবে প্রয়োজনীয় পুষ্টি, তেমনই আপনি থাকবেন ফিট ও উজ্জ্বল। অবশ্যই পরিমাণ মতো খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদেরা।