জিলহজ মাসের ৯ তারিখ আরাফাত দিবস। এটি অত্যন্ত মহিমান্বিত ও মর্যাদাপূর্ণ দিন। আরাফাতের দিনটি মূলত হজের দিন। হজরত উরওয়া ইবন মুদারিস (রা.) বলেন, আমি মুজদালিফায় হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি তাঈ গোত্রের দুই পাহাড় থেকে এসেছি। আর আমি কোনো পাহাড়ে অবস্থান বাদ দিইনি; এ অবস্থায় আমার কি হজ আদায় হয়েছে? হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে এই নামাজ আদায় করেছে আর এর আগে আরাফাতে অবস্থান করেছে- দিনে বা রাতে, তার হজ পূর্ণ হয়েছে এবং সে তার ইহরাম শেষ করেছে।’ -সুনানে নাসাঈ: ৩০৪৪
আরাফাত দিবসে বান্দার দিকে প্রবল বেগে আল্লাহর রহমতের জোয়ার আসে। অসংখ্য বান্দাকে তিনি ক্ষমা করে থাকেন এই দিনে। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আরাফাতের দিনের মতো আর কোনো দিন এত বেশি পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় না। এই দিন আল্লাহতায়ালা দুনিয়ার নিকটবর্তী হন এবং বান্দাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করেন। আল্লাহ বলেন, কী চায় তারা?’ -সহিহ মুসলিম: ১৩৪৮
হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহতায়ালা নিকটতম আসমানে আসেন এবং পৃথিবীবাসীকে নিয়ে আসমানের অধিবাসী অর্থাৎ ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করেন। বলেন, দেখো তোমরা, আমার বান্দারা উষ্কখুষ্ক চুলে, ধুলোয় মলিন বদনে, রোদে পুড়ে দূর-দূরান্ত থেকে এখানে সমবেত হয়েছে। তারা আমার রহমতের প্রত্যাশী। অথচ তারা আমার আজাব দেখেনি। ফলে আরাফাতের দিনের মতো আর কোনো দিন এত বেশি পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় না। -ইবনে হিব্বান: ৩৮৫৩
হাদিস শরিফে আরাফাতের দিনের দোয়াকে শ্রেষ্ঠ দোয়া বলা হয়েছে। নবীজি (সা.) বলেন, শ্রেষ্ঠ দোয়া আরাফাতের দোয়া। দোয়া হিসেবে সর্বোত্তম হলো- ওই দোয়া, যা আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীরা করেছেন। তা হলো-
لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
উচ্চারণ: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলক ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদির।’
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি একক, তার কোনো শরিক নেই, রাজত্ব একমাত্র তারই, সমস্ত প্রশংসাও একমাত্র তার জন্য, আর তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। -জামে তিরমিজি: ৩৫৮৫