বর্তমানে দেশে চলমান তীব্র গরম ও তাপদাহ জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ হুমকির রূপ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. অনুপম হোসেন।
তিনি বলেন, “চলমান তাপদাহ হিট স্ট্রোকসহ বিভিন্ন তাপমাত্রাজনিত অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। তাই সময়মতো সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণই জীবনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।”
তীব্র গরমে করণীয় বিষয়গুলো:
- রোদ এড়িয়ে চলুন: খুব প্রয়োজন না হলে দিনের বেলায় বাইরে বের না হওয়াই ভালো।
- সুতির হালকা জামাকাপড় পরুন: ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের সুতির পোশাক ব্যবহার করতে হবে।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন: দিনে অন্তত ২-৩ লিটার বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত, তবে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
- অতিরিক্ত পরিশ্রম এড়িয়ে চলুন: দিনের বেলা বেশি সময় ধরে কষ্টসাধ্য কাজ না করাই শ্রেয়।
- হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খান: এ সময় ভারী, আমিষ বা দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
- ছায়া বা ঠাণ্ডা স্থানে অবস্থান করুন: সরাসরি সূর্যালোক এড়িয়ে চলুন, প্রয়োজনে ছাতা বা টুপি ব্যবহার করুন এবং বারবার মুখে পানি ছিটিয়ে দিন বা গোসল করুন।
- ঘর শীতল রাখুন: দিনে হালকা রঙের পর্দা টানুন, রাতে জানালা খোলা রাখুন এবং ফ্যান ব্যবহার করুন।
- ক্যাফেইন, এলকোহল ও কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন: এসব পানীয় শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে, যা ঝুঁকি বাড়ায়।
- প্রস্রাবের রঙ লক্ষ্য করুন: যদি প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হয়, তবে তা পানি ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়। তখন বেশি করে পানি পান করুন।
এবং অসুস্থ বোধ করলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
ডা. অনুপম হোসেন বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন শিশু, বয়স্ক, স্থূলতা বা দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং কৃষক, রিকশাচালক ও নির্মাণ শ্রমিকদের প্রতি। এই শ্রেণীর মানুষ তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে শুধু নিজের সুরক্ষাই নয়, আমাদের আশপাশের মানুষদের প্রতিও দায়িত্ববান হতে হবে। বিশেষ করে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে। ইনশাআল্লাহ, সম্মিলিত সচেতনতাই আমাদের রক্ষা করতে পারবে।”