১০:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ময়মনসিংহে ঈদ ফেরত যাত্রীদের ট্রেনের ছাদেও উপচেপড়া ভিড়

 

ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটির শেষ দিনেও ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকামুখী কর্মজীবী মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ট্রেনের অভ্যন্তরে জায়গা না পেয়ে শত শত যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাদে উঠে যাত্রা করছেন। অতিরিক্ত ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন রেলওয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা।

 

স্টেশনে দেখা যায়, ট্রেনের ছাদে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রীদের গাদাগাদি করে উঠতে বাধা দিতে পারছেন না রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) ও রেল নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)। পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য উপস্থিত থাকলেও, তারা যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছেন।

 

যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষা ও তল্লাশি কার্যক্রমও কার্যত অচল হয়ে পড় সকাল থেকেই। ফলে অনেকেই বিনা টিকিটে ট্রেনে ওঠার সুযোগ নিচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, কিছু যাত্রী রেলকর্মীদের ঘুষ দিয়ে ট্রেনে ওঠেন। কাউকে নামিয়ে দিলেও পরবর্তীতে অনেকে আবার ছাদে উঠে যান।

 

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বিকেল ৫টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ স্টেশন থেকে ঢাকাগামী অন্তত আটটি আন্তঃনগর ও কমিউটার ট্রেন ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস, হাওড় এক্সপ্রেস, বলাকা কমিউটার ইত্যাদি।

 

নিরাপত্তা কর্মীদের মতে, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি ট্রেনের পাওয়ার কার, বুফে কারসহ অন্যান্য বগিতে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয়েছে। অধিকাংশ ছাদযাত্রীই টিকিটবিহীন। জিআরপি পুলিশ তাদের বাধা দিতে গেলে, অনেক যাত্রী উল্টো আক্রমণাত্মক আচরণ করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে।

 

এছাড়া যাত্রীদের অভিযোগ, অনেক বগির ফ্যান কাজ করছে না, ওয়াশরুমে দুর্গন্ধে টিকেই থাকা যায় না, এসি বগিতেও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নষ্ট। ভুয়া বা বিনা টিকিটের যাত্রীদের কারণে আসন নিয়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে। এমনকি, একটি আসনের জন্য চারটি টিকিট কিনতে বাধ্য হওয়ার অভিযোগও তুলেছেন অনেকে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ রেলওয়ের স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মো: নাজমুল হক খান বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। আর কোনো যাত্রী এসে কোনো অভিযোগ জানাননি।’

 

রেলের স্ট্যান্ডিং টিকিটের যাত্রীদের নিয়ে তিনি বলেন, ‘স্ট্যান্ডিং টিকিটের যাত্রীদের একটি ট্রেনের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করতে হচ্ছে। ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ না করতে আমরা যতই অনুরোধ করি না কেন, যাত্রীরা তা শুনবেন না। ছাদে ভ্রমণ ঠেকাতে আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকলেও তা শতভাগ সফল হয়নি।’

 

সব মিলিয়ে ঈদ-পরবর্তী যাত্রা যেন পরিণত হয়েছে দুর্ভোগ ও নিরাপত্তাহীনতার প্রতিচ্ছবিতে।

ট্যাগ :

ময়মনসিংহে ঈদ ফেরত যাত্রীদের ট্রেনের ছাদেও উপচেপড়া ভিড়

পোষ্টের সময় : ০৩:১৯:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

 

ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটির শেষ দিনেও ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকামুখী কর্মজীবী মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ট্রেনের অভ্যন্তরে জায়গা না পেয়ে শত শত যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাদে উঠে যাত্রা করছেন। অতিরিক্ত ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন রেলওয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা।

 

স্টেশনে দেখা যায়, ট্রেনের ছাদে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রীদের গাদাগাদি করে উঠতে বাধা দিতে পারছেন না রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) ও রেল নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)। পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য উপস্থিত থাকলেও, তারা যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছেন।

 

যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষা ও তল্লাশি কার্যক্রমও কার্যত অচল হয়ে পড় সকাল থেকেই। ফলে অনেকেই বিনা টিকিটে ট্রেনে ওঠার সুযোগ নিচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, কিছু যাত্রী রেলকর্মীদের ঘুষ দিয়ে ট্রেনে ওঠেন। কাউকে নামিয়ে দিলেও পরবর্তীতে অনেকে আবার ছাদে উঠে যান।

 

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বিকেল ৫টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ স্টেশন থেকে ঢাকাগামী অন্তত আটটি আন্তঃনগর ও কমিউটার ট্রেন ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস, হাওড় এক্সপ্রেস, বলাকা কমিউটার ইত্যাদি।

 

নিরাপত্তা কর্মীদের মতে, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি ট্রেনের পাওয়ার কার, বুফে কারসহ অন্যান্য বগিতে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয়েছে। অধিকাংশ ছাদযাত্রীই টিকিটবিহীন। জিআরপি পুলিশ তাদের বাধা দিতে গেলে, অনেক যাত্রী উল্টো আক্রমণাত্মক আচরণ করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে।

 

এছাড়া যাত্রীদের অভিযোগ, অনেক বগির ফ্যান কাজ করছে না, ওয়াশরুমে দুর্গন্ধে টিকেই থাকা যায় না, এসি বগিতেও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নষ্ট। ভুয়া বা বিনা টিকিটের যাত্রীদের কারণে আসন নিয়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে। এমনকি, একটি আসনের জন্য চারটি টিকিট কিনতে বাধ্য হওয়ার অভিযোগও তুলেছেন অনেকে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ রেলওয়ের স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মো: নাজমুল হক খান বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। আর কোনো যাত্রী এসে কোনো অভিযোগ জানাননি।’

 

রেলের স্ট্যান্ডিং টিকিটের যাত্রীদের নিয়ে তিনি বলেন, ‘স্ট্যান্ডিং টিকিটের যাত্রীদের একটি ট্রেনের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করতে হচ্ছে। ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ না করতে আমরা যতই অনুরোধ করি না কেন, যাত্রীরা তা শুনবেন না। ছাদে ভ্রমণ ঠেকাতে আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকলেও তা শতভাগ সফল হয়নি।’

 

সব মিলিয়ে ঈদ-পরবর্তী যাত্রা যেন পরিণত হয়েছে দুর্ভোগ ও নিরাপত্তাহীনতার প্রতিচ্ছবিতে।